ফাঁকিবাজদের জন্য বিসিএস প্রিলি পাশ করার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন
ফাঁকিবাজদের জন্য বিসিএস প্রিলি পাশ করার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন
ফাঁকিবাজদের জন্য বিসিএস প্রিলি পাশ করার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইনঃ
সবাই বলে কি কি পড়তে হবে; আসলে প্রিলি পাশ করতে হলে জানতে হবে কি কি বাদ দিয়ে পড়তে হবে। লেখাটি সম্পূর্ণ পড়বেন। নিচে শুধু বিষয়ভিত্তিক বই নয় সাথে দেওয়া আছে কোন বিষয়ে কি কি পড়বেন। প্রতি বিষয়ের বইয়ের তালিকার সাথে দেওয়া আছে ফাঁকিবাজদের বিসিএস প্রিলি পাশ করার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন ।আমি আজ আলোচনা করবো কি কি বাদ দিয়ে পড়তে হবে ! মূল জোর দিতে হবেঃ
১। বাংলা সাহিত্য ও গ্রামার
২। ইংরেজি গ্রামার
৩। গনিত
৪। মানসিক দক্ষতা
৫। কম্পিউটার
৬। বিজ্ঞান
২। ইংরেজি গ্রামার
৩। গনিত
৪। মানসিক দক্ষতা
৫। কম্পিউটার
৬। বিজ্ঞান
বাংলা সাহিত্যঃ
প্রাচীন ও মধ্যযুগ, আধুনিক (১৮০০ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সাহিত্যিকদের সাহিত্য কর্ম ও ব্যক্তিগত বিষয়াবলী) ছাড়া খুব আধুনিক গুলো চোখ বন্ধ করে বাদ !
প্রাচীন ও মধ্যযুগের সাহিত্যিক ও সাহিত্য নির্দিষ্ট তাই পরিমাণে ছোট এবং নিশ্চিত ভাবেই ৫ নম্বর পাওয়া যায়। আর ১৯৭৫ এর আগেই বাংলা সাহিত্যে মহাপুরুষরা এসে গেছেন, হয়ে গেছে আমাদের ভাষা আন্দোলন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ! তাই ১৯৭৫ এর পরের সাহিত্যিকদের মধ্য থেকে যা আসবে হয়তো এমনি ২-৩ টা পারবো, গেলই না হয় ২-৩ মার্কস… তাঁর জন্য কি জীবন দিয়ে দিতে হবে?
বাংলা ব্যকরণঃ
প্রত্যয় ও সমাস বাদ… ২ মার্কস এর জন্য এতো এতো পড়া লাগবে?
ইংরেজি গ্রামারঃ
Synonymy and Antonym, Word Meaning বাদ… গেলোই না হয় ২-৩-৪ মার্কস !! কিন্তু এইগুলার জন্য যে পরিমাণ খাটতে হয়– অন্য জায়গায় এই সময় দিলে ১০ মার্কস পাওয়া সম্ভব ! তাছাড়া ভাগ্য ভালো থাকলে Synonymy and Antonym, Word Meaning থেকে ২-১ টা পেরেও যেতে পারেন !
ইংরেজি সাহিত্যঃ
শুধু মেইন মেইন ইংরেজি সাহিত্যিকদের বিখ্যাত কিছু সাহিত্য কর্ম আর তাদের বিখ্যাত উক্তি ছাড়া বাকি সব বাদ… যদি প্রশ্ন সহজ করে তাহলে এই বিখ্যাত সাহিত্যিকদের মধ্য থেকেই আসবে, না হলে সবাই মুড়ি খাবে নিশ্চিত থাকেন ! এই জন্য সবচেয়ে সহজ পন্থা হচ্ছে… ইংরেজি সাহিত্য থেকে বিগত সালে বিসিএস সহ অন্যান্য সরকারী ও বেসরকারি পরীক্ষায় যে প্রশ্ন গুলো এসেছে শুধু সেগুলাই ভালো করে পড়ে ফেলেন। এতো গভীরে যাবার কোন দরকার নাই !
কম্পিউটারঃ
সবচেয়ে সহজ একটা বিষয়। মন লাগিয়ে ২-৩ বার পড়লে এই বিষয়ে মার্কস না উঠানো কঠিন হয়ে পড়বে আপনার জন্য, কারন আপনি সবই পারবেন ! তাই এই বিষয়ে খুব খুব জোর দিন !! এখানে কিছু বাদ দিবেন না। যদি দিতেই চান তাহলে বিভিন্ন মোবাইল প্রজন্ম এবং বর্তমানে কি ধরনের মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু ইত্যাদি টাইপ বোরিং টপিক বাদ দিতে পারেন। বড় জোর ১ মার্কস কম পাবেন !!
গনিতঃ
পাটিগণিত চোখ বন্ধ করে বাদ !!
কেন বাদ?
পাটিগণিতের সিলেবাসটা একটু স্মরণ করিয়ে দেইঃ বাস্তব সংখ্যা, ল সা গু, গ সা গু, শতকরা, সরল ও যৌগিক মুনাফা, আনুপাত ও সমানুপাত, লাভ ও ক্ষতি… যে কোন গনিতের প্রিলি গাইড নেন, দেখবেন এই পাটিগণিতের সিলেবাস বইয়ের অর্ধেকটা নিয়ে ফেলেছে, অথচ এই সব গুলো টপিকস মিলিয়ে মার্কস কতো জানেন? মাত্র ৩…… !!! এই ৩ মার্কসের জন্য শহীদ হয়ে যাব নাকি ভাই?
অথচ পাটিগণিত বাদ দিয়ে যে বিশাল পরিমাণ সময় সেভ হয়, সেই সময়ে গনিতের বাকি সিলেবাসের টপিকস গুলো প্র্যক্তিস করুন বার বার। আর ভাগ্য ভালো থাকলে, পাটিগণিতের ২-১ টা এমনকি খুব ভাগ্য ভালো থাকলে ৩ টাই এমনি পেরে যেতে পারেন !!
আর বিন্যাস, সমাবেশ, সম্ভাব্যতা কঠিন লাগে? এগুলা আসলে অনেক সহজ… আপনি সাইন্স এর বিশেষ করে ইন্টার যাদের সাইন্স ছিল তাদের কাছে ৩-৪ ঘণ্টা সময় নিয়ে ব্যাপারটা বুঝে ফেলুন ! দেখবেন পানি পানি লাগছে !
মানসিক দক্ষতাঃ
ভাষাগত যৌক্তিক বিচার এবং বানান ও ভাষা এই দুইটা টপিকস আপনি বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরণ পড়ার সময় যতটুকু পড়ে ফেলবেন সেটাই যথেষ্ট, এর জন্য বেশি সময় দেয়া প্রয়োজন নাই !! বাকি গুলাও গনিত করার সময় মোটামুটি পড়ে ফেলা হয়ে যায় ! মানসিক দক্ষতা কিছুটা কমন সেন্স আর কিছুটা প্র্যাকটিস এর সমন্বয়ে ভালো করা যায় !
বাজার থেকে শুধু মানসিক দক্ষতার উপর একটা বই কিনে প্রতিদিন ১ ঘণ্টা প্র্যাকটিস করুন ! আশা করি ১৫ এর মধ্যে ১২-১৩ টা পেয়ে যাবেন, ১০ টা হলেও কিন্তু মন্দ না !
বিজ্ঞানঃ
বিজ্ঞানে তিনটা পার্ট। প্রতি পার্টে ৫ নম্বর করে মোট ১৫ মার্কস। এর মধ্যে ‘ভৌত বিজ্ঞান‘ পার্টটা সবচেয়ে বড় ! পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন বিজ্ঞানের সমন্বয়ে গড়া এই পার্টে মাত্র ৫ মার্কস… অথচ বিশাল সিলেবাস। আমরা যেহেতু ফাঁকিবাজ… তাই এই পার্ট আমরা পড়বো না ! আর যদি খুব পড়তে মন চায়, তাহলে শুধু বিগত সালের বিভিন্ন সরকারী চাকরী পরীক্ষায় আসা প্রশ্ন গুলোই পড়বো… গভীরে যাব না !
বাকি দুইটি পার্ট ‘জীব বিজ্ঞান’ ও ‘আধুনিক বিজ্ঞান’ তুলনামূলক ছোট এবং সহজ ! এই দুই পার্টে একটু সময় দেন !
বাংলাদেশ বিষয়াবলীঃ
ইংরেজি শাসন আমল থেকে মুক্তিযুদ্ধ পড়বো, বাকি গুলা বাদ ! অর্থনৈতিক সমীক্ষার মূল মূল তথ্য গুলো পড়বো ! গভীরে যাবার দরকার নাই।
বাংলাদেশের সংবিধান পড়তেই হবে ! তবে বেছে বেছে… সব নয় ! বিশেষ করে ১-৪৭ ধারা, ৬৪, ৬৬, ৭৭, ৯৩, ৯৪, ১১৭, ১১৮,১১৯, ১২৭, ১৩৭, সংশোধনী– ১ম থেকে ৫ম, ৮ম, ১৫তম, ১৬ তম !!
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীঃ
আর ‘আন্তর্জাতিক পরিবেশগত ইস্যু ও কূটনীতি’ এবং ‘আন্তর্জাতিক সংগঠনসমূহ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানাদি’ ছাড়া বাকি সব বাদ…
ভূগোল ও পরিবেশঃ
আমাদের একটা পিডিএফ আছে এর উপরে এটা পডলেই এনফ! ওইটাই উল্টে পাল্টে ৩ বার পড়েন ! আর কিছু লাগবে না !
নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসনঃ
এই টপিকস এ যত পারেন কম উত্তর করবেন ! উত্তর গুলো কেমন যেন থাকে ! তাই ভুল করার চান্স থাকে… কমন সেন্স থেকে 4-5 টা এমনি পারবেন, তবুও চাইলে বিগত বছরে আসা প্রশ্ন গুলো চোখ বুলাতে পারেন ! তবে যারা একটু আঁতেল, তাঁরা চাইলে প্রফেসর মোজাম্মেল হক এর জুন মাসে আসা নতুন বই ‘পৌরনিতি ও সুশাসন’ প্রথম পত্র বইটার ১ম ও ২য় অধ্যায় দেখতে পারেন !
২০০ মার্কের প্রিলি, আপনি চাইলেও ১৪০ টার বেশি পারবেন না !! আর কাট মার্কস এবার ১০০- ১১০ এর কম থাকবে… তাই দুনিয়া পড়ে লাভ নাই ! টার্গেট রাখেন ১১০… তাই আপনি কোন কোন বিষয় বেশি পারেন সেটা ঠিক করে আর নম্বর বণ্টন দেখে একটা প্ল্যান তৈরি করে মাঠে নেমে পড়ুন !!
আপনি যেহেতু উপরের সবগুলো ফলো করবেন সুতরাং বলা যেতে পারে আপনার বিসিএস ৭০% কনফার্ম 🙂 বিসিএস এর বিভিন্ন ক্যাডার সম্পর্কে আপনি না জেনে থাকলে নিচের লিঙ্কে ঠু মেরে আসুন
Link 1: বিসিএসের বিভিন্ন ক্যাডার সম্পর্কে আপনি জানেন কি ? https://suggestionbd24.blogspot.com/2018/11/blog-post_30.html
Link 2: বিসিএসে সবচেয়ে ভাল ক্যাডার কোনটি https://suggestionbd24.blogspot.com/2018/11/blog-post_98.html
Link 3: বিসিএসের ক্যাডার চয়েসঃ সঠিক ক্যাডার পছন্দক্রম কিভাবে নির্ধারণ করবেন দেখে নিন https://suggestionbd24.blogspot.com/2018/11/blog-post_13.html
♓বিসিএস এর বিভিন্ন ক্যাডার সম্পর্কে আপনি জানেন কি?
জীবনবৃত্তান্ত হচ্ছে একজন সম্ভাব্য চাকুরীদাতার কাছে একজন চাকুরীপ্রার্থী হিসাবে উপস্থাপন করার প্রাথমিক মাধ্যম ৷ কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় চাকুরীপ্রার্থীরা তাদের জীবনবৃত্তান্ত সুন্দর এবং সঠিকভাবে তৈরী করার ব্যপারে গুরুত্ব প্রদান করে না ৷ চাকরির জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে হলে সর্বদা খেয়াল রাখা প্রয়োজন যে এটি যেন আকর্ষণীয় হয়। এতে যদি গুরুত্বর্পূ তথ্যঘাটতি থাকে কিংবা পাঠযোগ্য না হয় তাহলে চাকরি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এ কারণে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ রাখা উচিত জীবনবৃত্তান্ত বানানোর সময়।
চাকরির জন্য আকর্ষণীয় জীবনবৃত্তান্ত কিভাবে বানাবেন ?
মাঝে মাঝে পড়তে ইচ্ছে করবে না, আমারও করত না৷ সারাক্ষণ পড়তে ইচ্ছে করাটা মানসিক সুস্থতার লক্ষণ না৷ Why so serious? Job for Life, not Life for Job. তাই, ব্রেক নিন, পড়াকে ছুটি দিন৷ মাঝেমধ্যেই৷ দু’দিন পড়া হ’লো না বলে মন খারাপ করে আরো দু’দিন নষ্ট করার তো কোন মানে হয়না৷ অনুশোচনা করার সময় কোথায়?গ্রুপ স্টাডি করা কতোটুকু দরকার? এটা আপনার অভ্যেসের উপর নির্ভর করে। আমার নিজের এই অভ্যেস ছিলো না। আমি গ্রুপ স্টাডি করতাম না ২টা কারণে। এক। যখন দেখতাম, সবাই অনেককিছু পারে, যেগুলোর কিছুই আমি পারি না, তখন মন খারাপ হতো। আমি পারি না, এটা ভাবতে ভালো লাগে না। The Pursuit of Happyness এর ডায়লগটা মনে আছে তো? দুই। সবার সাথে পড়লে বেশি বেশি গল্প করতে ইচ্ছে করতো, আর মনে হতো, ওরা যেটা করছে সেটা ঠিক, আমার নিজেরটা ভুল। অন্ধ অনুকরণ করতে ভালো লাগে না।
সবার জন্য শুভকামনা।
– সুশান্ত পালের বিভিন্ন পোস্ট, অনলাইনের বিভিন্ন আর্টিকেল থেকে সংগৃহীত।
No comments